মাত্র ২০০ টাকা জমিয়েই প্রতি মাসে ৫০০০ টাকার নিশ্চিত পেনশন! আবেদন করুন কেন্দ্রের Atal Pension Scheme এ
মাত্র ২০০ টাকা জমালেই অবসর বয়সে বসে বসে পেনশন পাবেন সরকারের ঘর থেকে। এর জন্য করতে হবে না কোন সরকারি চাকরি। তাহলে কীভাবে মিলবে এই পেনশন? চলুন জেনে নেওয়া যাক...

মাত্র ২০০ টাকা জমালেই অবসর বয়সে বসে বসে পেনশন পাবেন সরকারের ঘর থেকে। এর জন্য করতে হবে না কোন সরকারি চাকরি। তাহলে কীভাবে মিলবে এই পেনশন? পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যসভার সমগ্র ভারতবর্ষের নাগরিকদের সার্বিক উন্নতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকার একাধিকভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে এসেছে। এইবারেও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ১৮ বছর থেকে ৪০ বছর বয়সি মানুষদের জন্য দুর্দান্ত পেনশন স্কিম (Atal Pension Scheme) শুরু করা হলো। যেখানে মাত্র ২০০ টাকা জমালেই পাওয়া যাবে মাসিক পেনশনের সুযোগ।
বার্ধক্য অবস্থা যেকোনো মানুষের কাছেই দুঃস্বপ্নের মত হয়ে থাকে। সেই সময় আমাদের কাজ করার যথেষ্ট শক্তি থাকে না। সারা জীবন কাজ করার পর ৬০ বছরের পরে অবসরের সময়ে মানুষ একটু শান্তি চায়। কিন্তু এই সময় এই আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়েন ভারতের বৃদ্ধ মানুষেরা। কিন্তু মাসিক রোজগার না থাকলেও এবার আর চিন্তা করার কোনো কারণ নেই। কেন্দ্রীয় সরকার কিংবা রাজ্য সরকারের কর্মচারী না হলেও প্রতি মাসে পেনশনের সুযোগ করে দিচ্ছে সরকার। কীভাবে এই পেনশন পাবেন? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
কেন্দ্রীয় সরকারের পেনশন যোজনা (Atal Pension Scheme)
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বর্তমানে অটল পেনশন যোজনা (Atal Pension Scheme) নামে একটি দুর্দান্ত পেনশন প্রকল্প চালু রয়েছে। যেখানে সরকারি কর্মচারী না হলেও কেন্দ্রীয় সরকারের পেনশনের সুযোগ পেয়ে থাকেন সাধারণ নাগরিকরা। দিনমজুর, শ্রমিক, হকার কিংবা পরিচারিকার মতো অসংগঠিত কাজে যুক্ত থাকা মানুষেরা এই স্কিমে আবেদন জানিয়ে নিজেদের ভবিষ্যতকে সুরক্ষিত করে তুলতে পারেন। যেকোনো ব্যাংক বা পোস্ট অফিসে গিয়ে এই স্কিমের বিষয়ে বিশদে জানা যায় এবং আবেদন জানানো যায়। এর পাশাপাশি বর্তমানে অনলাইনেও অটল পেনশন যোজনায় আবেদন জানানো সম্ভব।
অটল পেনশন যোজনায় আবেদনের যোগ্যতা
১) আবেদনকারীকে অবশ্যই ভারতবর্ষের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
২) আবেদনকারী কোন কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকারি কর্মচারী হয়ে থাকলে এই প্রকল্পের আবেদন জানাতে পারবেন না।
৩) ন্যূনতম ১৮ বছর থেকে সর্বোচ্চ ৪০ বছরের মধ্যে ইচ্ছুক আবেদনকারীকে এই প্রকল্পে আবেদন জানাতে হবে।
৪) পুরুষ অথবা মহিলা যে কোন আবেদনকারী এখানে আবেদন জানাতে পারবেন এবং তাদের অবশ্যই যে কোন ব্যাংকে একটি সেভিংস একাউন্ট থাকতে হবে।
যোজনার সুযোগ সুবিধা
অটল পেনশন যোজনা ভারতবর্ষের বৃহত্তম পেনশন স্কিম গুলির মধ্যে অন্যতম। যে বয়সের সাধারণ মানুষ খেটে রোজগার করতে পারেন, সেই বয়সেই এই প্রকল্পের টাকা সঞ্চয় করে ভবিষ্যৎকে সুনিশ্চিত করে তোলা সম্ভব। ক্ষেত্রে আবেদনপত্র পূরণ করার সময় নিজের নাম, আধার কার্ড এবং নমিনী সংক্রান্ত তথ্যগুলি জমা করতে হয়। এরপর থেকেই প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা কেটে অটল পেনশন একাউন্টে জমা হতে থাকে। এর পাশাপাশি সমপরিমাণ টাকা কেন্দ্রীয় সরকার দিয়ে থাকে এই প্রকল্পের খাতায়। এইভাবে মোট ৬০ বছর পর্যন্ত টাকা জমাতে হয় প্রতিমাসে।
আবেদনকারী প্রার্থীদের ৬০ বছর পূর্ণ হওয়ার পর প্রতি মাসে ১০০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত পেনশন ঢুকতে থাকে উপভোক্তার ব্যাংক একাউন্টে। এই টাকার পরিমাণ মূলত জমানো অর্থের পরিমাণ এর উপর নির্ভর করে থাকে। যেকোনো নিকটবর্তী ব্যাংক বা পোস্ট অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করলেই এই স্কিমের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে পারবেন।
উপভোক্তার মৃত্যুর পরে নমিনিকে টাকা দেওয়া হবে
অটল পেনশন যোজনার মাধ্যমে উপভোক্তার সঞ্চিত অর্থ পরবর্তী সময়ে তার নমিনি পেতে পারবেন। সরকারি পেনশন স্কীম এর মতই এক্ষেত্রে উপভোক্তার মৃত্যু হলে পেনশনের টাকা বন্ধ হয় না। অ্যাকাউন্ট হোল্ডার মারা গেলে তার স্বামী বা স্ত্রী কিংবা মনোনীত ব্যক্তি পেনশনের টাকা পেতে থাকবেন। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই নিজের ভবিষ্যৎ সুরক্ষার পাশাপাশি পরিবারের সুরক্ষার বিষয়টিও নিশ্চিত করা যায়।
কর ছাড়ের সুবিধা
অটল পেনশন যোজনায় বিনিয়োগ করলে শুধুমাত্র যে ভবিষ্যতের পেনশনের মাধ্যমে নিজের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা যায়, তাই নয়, বরং এই স্কিমে বিনিয়োগ করে আয়করের ক্ষেত্রেও ছাড় পেতে পারেন। কেন্দ্রীয় সরকারের আয়কর আইন অনুসারে, বছরে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত করের ছাড় পেয়ে থাকেন অটল পেনশন যোজনার উপভোক্তারা।
সুতরাং এক কথায়, অটল পেনশন যোজনা মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত খেটে খাওয়া মানুষের পাশে ভবিষ্যতের দিশারী হিসেবে কাজ করে থাকে। আপনিও চাইলেই এই বছর থেকেই শুরু করে দিতে পারেন এই প্রকল্পে টাকা জমানো।