Trending News

আগস্ট মাসে পশ্চিমবঙ্গে শুরু ভোটার ভেরিফিকেশন! এই ১১ টি নথি না থাকলেই বিপদ!

ভোটাধিকার শুধুই অধিকার নয়, এটা আমাদের আত্মপরিচয়ের প্রতিচ্ছবি। ভুল নথি বা অবহেলার কারণে যেন বাদ না পড়ে আপনার নাম—জেনে নিন SIR সংক্রান্ত প্রতিটি তথ্য।

২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগেই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে Special Intensive Revision বা ভোটার তালিকা নিবিড় সংশোধন শুরু হতে চলেছে। বিহারের পর এবারে এই রাজ্যেও অযোগ্য ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে একদিকে NRC, CAA জনিত একাধিক সমস্যা চলছে, অপরদিকে এবারে ভোটার তালিকা নিবিড় সংশোধন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ খবর প্রকাশিত হলো।

সম্প্রতি ২০২৫ সালের বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে লক্ষ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে তালিকা থেকে। সারাদেশ জুড়ে বাঙালি ভাষাভাষীদের বাংলাদেশী সন্দেহ করে একাধিক প্রশ্নের সম্মুখীন করা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের যে আর কিছুদিনের মধ্যেই SIR প্রক্রিয়া শুরু হতে চলেছে, সেই বিষয়ে যথেষ্ট নিশ্চিত প্রশাসন।

ইতিমধ্যেই সরকারি আধিকারিকদের ট্রেনিং শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। সমীক্ষা চলাকালীন অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ নথি দেখাতে হবে। না হলে আপনার নাম বাদ যাবে ভোটার তালিকা থেকে। তাই আর দেরি না করে SIR সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য বিস্তারিত জেনে নিন।

Special Intensive Revision বা SIR সম্পর্কিত তথ্য

সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ভোটার তালিকা নিবিড় সংশোধন নিয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। ২০২৫ সালের আগস্ট মাস থেকেই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে এই কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে জানা যাচ্ছে। স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন বা SIR চলাকালীন সঠিক নথি জমা করতে হবে প্রতিটি ভোটারকে। ভোটাধিকার মানুষের বিশেষ করে ভারতীয় নাগরিকদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধিকার বলে বিবেচনা করা হয়। তাই নির্বাচন কমিশনের কাছে নিজেদের সত্যতা যাচাই করতে হবে এবার সমস্ত ভোটারকে।

Special Intensive Revision এর জন্য কোন কোন নথি প্রয়োজন হবে?

ভোটার তালিকা নিবিড় সংশোধনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মোট ১১ টি নথি পরিচয় পত্র হিসাবে ব্যবহার করতে হবে। রাজ্যের সমস্ত ভোটার যাতে নিজেদের সত্যতা যাচাই করাতে পারেন এবং নিজেদেরকে বৈধ ভোটার হিসাবে প্রমাণ করতে পারেন, তার জন্য মোট ১১ টি নথির মধ্যে যেকোনো একটি গ্রহণ করছে নির্বাচন কমিশন। এই গ্রহণযোগ্য ১১ টি নথির বিস্তারিত উল্লেখ করে নিচে একটি তালিকা প্রস্তুত করা হলো-

১) কেন্দ্রীয় সরকার বা রাজ্য সরকার দ্বারা জারি করা পরিচয় পত্র বা পেনশন পেমেন্ট অর্ডার,
২) বৈধ পাসপোর্ট,
৩) সরকারি কর্তৃপক্ষের দ্বারা জারি করার জন্ম সার্টিফিকেট,
৪) ১ জুলাই, ১৯৮৭ তারিখের আগে সরকার, ব্যাংক, পোস্ট অফিস বা কোন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার দ্বারা জারি করা পরিচয় পত্র,
৫) শিক্ষিত বোর্ড বা বিদ্যালয় কর্তৃক উচ্চশিক্ষার সার্টিফিকেট বা মাধ্যমিক পরীক্ষার সার্টিফিকেট,
৬) অরণ্যের অধিকার আইনের অধীনে দেওয়া সার্টিফিকেট,
৭) রাজ্যের কর্তৃপক্ষ দ্বারা জারি করার স্থায়ী ঠিকানার প্রমাণপত্র,
৮) জাতিগত সার্টিফিকেট,
৯) সরকারি জমি বা বাড়ির অ্যালটমেন্ট সার্টিফিকেট,
১০) রাজ্য বাস স্থানীয় কর্তৃপক্ষের দ্বারা জারি করা পারিবারিক রেজিস্টার,
১১) NRC এর গুরুত্বপূর্ণ নথি।

স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা SIR এর সমগ্র প্রক্রিয়াটিকে সুশৃংখল করতে তিনটি বিভাগের মাধ্যমে নথির প্রয়োজনীয়তা নির্ধারণ করা হয়েছে নির্বাচন কমিশনের তরফে। এক্ষেত্রে মূল তিনটি বিভাগ রয়েছে- জন্ম ১লা জুলাই, ১৯৮৭ এর আগে, জন্ম ১লা জুলাই, ১৯৮৭ থেকে ১লা জানুয়ারি, ২০০২-এর মধ্যে ও জন্ম ১লা জানুয়ারি, ২০০২-এর পরে হওয়ার উপর নির্ভর করে।

১) জন্ম ১লা জুলাই, ১৯৮৭ এর আগে হলে-

যদি কোন ব্যক্তির জন্ম জন্ম ১লা জুলাই, ১৯৮৭ এর আগে হয়ে থাকে, তাহলে তাদের একটি মাত্র নথি জমা করতে হবে। পড়ে উল্লেখিত ১১ টি নথির মধ্যে যেকোনো একটি নথি বেছে নিয়ে সেটি জমা দেওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি আপনার নাম যদি ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় থাকে, তাহলে তার এক কপি জমা দিলে অন্য কোন নথির প্রয়োজন হবে না।

২) জন্ম ১লা জুলাই, ১৯৮৭ থেকে ১লা জানুয়ারি, ২০০২-এর মধ্যে হলে-

উপরে উল্লেখিত সময়কালের মধ্যে কোন ব্যক্তির জন্ম হয়ে থাকলে, উপরে উল্লেখিত ১১ টি নথির মধ্যে যেকোনো একটি অথবা ২০০২ সালের ভোটার তালিকার কপি জমা দেওয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে যদি ২০০২ সালে ১৮ বছর না হয়, তাহলে ১১ টি নদীর মধ্যে যে কোন একটি আবশ্যকভাবে জমা করতে হবে। এর পাশাপাশি বাবা-মায়ের জন্য একটি নথি জমা করা যেতে পারে।

৩) জন্ম ১লা জানুয়ারি, ২০০২-এর পরে হলে-

২০০২ সালের পরে যে সমস্ত ভোটারদের জন্ম হয়েছে, তাদের প্রত্যেককে উপরে উল্লেখিত ১১ টি নথির মধ্যে যেকোনো একটি নদীর জমা করতে হবে। এক্ষেত্রে সঠিক নথি জমা করলে ভোটার তালিকায় নাম নথিভুক্তিকরণ সঠিকভাবে হবে।

কাদের নাম বাদ যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে?

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন বা SIR এর দ্বারা মৃত ব্যক্তি, যাদের নাম এখনো পর্যন্ত ভোটার তালিকা থেকে সরানো হয়নি, একই ব্যক্তির একাধিক নামে এন্ট্রি, অন্য রাজ্যের বাসিন্দা হিসাবে যারা ভোটাধিকার পাচ্ছিলেন -তাদের সকলের নাম বাদ যাবে ভোটার তালিকা থেকে।

এর পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কোন বাংলাদেশের বাসিন্দা এসে ভোটাধিকার পেয়ে থাকলে, তারা যদি সঠিক প্রমাণ না দেখাতে পারেন তাহলে সেই নামও বাদ দেওয়া হতে পারে। যদিও এক্ষেত্রে কোন বৈধ ব্যক্তির নাম যাতে বাদ না যায়, সেই বিষয়টির উপর নজর রাখছে নির্বাচন কমিশন।

Miss Basu

সৃষ্টি বসু! WB Tathya সাইটের কন্টেন্ট রাইটার। বিগত ৬ বছর ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় কন্টেন্ট লিখছেন। বারাসাত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আর্টস নিয়ে স্নাতক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button