রাজ্যের কোষাগারে টান, বন্ধ হতে চলেছে ১০০ দিনের কাজ, লক্ষ্মীর ভান্ডার বা বাংলার বাড়ির মত প্রকল্প?

রাজ্য জুড়ে বন্ধ হয়ে যেতে চলেছে একাধিক প্রকল্প। ১০০ দিনের কাজ থেকে শুরু করে লক্ষ্মীর ভান্ডার বা বাংলার বাড়ি প্রকল্পের মত একাধিক প্রকল্প চালানোর জন্য এবার রাজ্যের কোষাগারে জোরদার টান পড়েছে। সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার মামলাতেও সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়টি স্পষ্ট করেছে যে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কোষাগারে যথাযথ টাকা নেই কর্মীদের বকেয়া মেটানোর জন্য।
এমন পরিস্থিতিতে রাজ্যের প্রকল্প চালানোর জন্য কোন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে নবান্ন? কোন কোন প্রকল্পগুলি অদূর ভবিষ্যতেই বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে? জানতে হলে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে আজকের প্রতিবেদনটি।
রাজ্যে আর্থিক অনটন, কড়া সিদ্ধান্ত নবান্নের
এবার থেকে আর কোন প্রকল্পের জন্য ইচ্ছামত টাকা অনুদান দিতে পারবে না সরকারি দপ্তর গুলি। লাগাম লাগানো হলো সমস্ত প্রকল্পে। রাজ্যের ২০২৩ সালের বিদেশিকা অনুসারে সরকারি বেশ কয়েকটি দপ্তর নিজেদের ইচ্ছামত ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত অনুদান দিতে পারতো। এবারে সেই অংক কমিয়ে তিন কোটি টাকা করা হয়েছে। লাগাম লেগেছে পূর্ত, সেচ, স্বাস্থ্য, পুর-নগরোন্নয়ন বা পঞ্চায়েত দপ্তরের আর্থিক অনুদান প্রকল্প গুলিতেও। শুধুমাত্র নতুন প্রকল্পগুলির জন্যই নয়, পাশাপাশি পুরনো প্রকল্পগুলিতেও এই নিয়ম প্রযোজ্য করা হচ্ছে।
বেশ কিছু উন্নয়ন সম্পর্কিত প্রকল্পগুলিতেও অনুমোদনের সীমা কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এরমধ্যে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন এবং সুন্দরবন উন্নয়নের মত উন্নতিশীল প্রকল্পগুলিতে অনুমোদনের সীমা তিন কোটি থেকে নামিয়ে এক কোটি টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি আবাসন, তথ্য সংস্কৃতি দপ্তর এবং ক্ষুদ্র মাঝারি শিল্পগুলিকে ৭৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অনুমোদনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই দপ্তর গুলি বাদে অন্যান্য দপ্তরের ক্ষেত্রে অনুমোদনের ঊর্ধ্বসীমা থাকছে ৫০ লক্ষ টাকা।
কেন্দ্র টাকা না দেওয়ায় রাজ্যের কোষাগারে চাপ
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে বেশ কয়েক বছর ধরেই বন্ধ রয়েছে কেন্দ্রের অনুদান। এর ফলে রাজ্য বাসীর সুবিধার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারা পরিচালিত প্রকল্পগুলিকে নতুনভাবে রাজ্য সরকারের দ্বারা সূচনা করা হয়েছে। এর ফলে ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা বা স্বরূপ প্রকল্পের মতো জনদরদী প্রকল্পগুলি নতুন করে শুরু করায় খরচ বেড়েছে যথেষ্ট পরিমাণে। পাশাপাশি কন্যাশ্রী লক্ষ্মীর ভান্ডার বা স্বাস্থ্য সাথীর মতো রাজ্য সরকারের প্রকল্পগুলির চাহিদাও রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে। এর ফলের মূলত রাজ্যের কোষাগার শূন্যের পথে।
খরচের আগে নিতে হবে অনুমতি
এবারে রাতের অর্থ দপ্তরের তরফে স্পষ্ট ভাবে জানানো হয়েছে, অযথা কোনো ক্ষেত্রেই টাকা খরচ করা যাবে না। বর্তমানে বহু দপ্তর অযথা একাধিক ক্ষেত্রে অর্থ ব্যয় করছে। কোনরকম খরচের হিসাব ঠিকমতো রাখা হচ্ছে না। তাই এবার খরচের আগে যথাযথ অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হচ্ছে। এবার থেকে কোন প্রকল্পে টাকা দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উপদেষ্টার ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।