উচ্চশিক্ষার জন্য শুরু হল বিশেষ সরকারি Education Loan! কীভাবে আবেদন জানাবে? কখন এই লোন নেওয়া উচিত? জেনে নাও বিস্তারিত
আজকের মূল্য বৃদ্ধির বাজারে অন্যান্য খরচের পাশাপাশি লেখাপড়ার খরচও বিপুল পরিমাণে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই আজকের প্রতিবেদনে আমরা এডুকেশনাল লোন সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য বিশদে আলোচনা করতে চলেছি...

Education Loan: আজকের মূল্য বৃদ্ধির বাজারে অন্যান্য খরচের পাশাপাশি লেখাপড়ার খরচও বিপুল পরিমাণে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে মাধ্যমিক কিংবা উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত লেখাপড়ার ক্ষেত্রে খুব বেশি খরচ না হলেও, কলেজে পড়াশোনার ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয় যথেষ্ট পরিমাণে আর্থিক শক্তি। এর পাশাপাশি যদি কলেজে নিজের পছন্দমত কোন পেশাগত কোর্সে ছাত্র ছাত্রী ভর্তি হতে চায়, সেই ক্ষেত্রে তো আরো বেশি পরিমাণে টাকার প্রয়োজন হয়।
তবে অনেক সময় এই এই টাকা সাধারন মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেমেয়েদের কাছে থাকে না। তাই অনেকেই এডুকেশনাল লোনের সহায়তা নিয়ে থাকেন। আবার অনেক সময় এই ছাত্র-ছাত্রীরা এডুকেশনাল লোন সম্পর্কে বেশি না জানার কারণে তাদের উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে যায়। তাই আজকের প্রতিবেদনে আমরা এডুকেশনাল লোন সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য বিশদে আলোচনা করতে চলেছি। মূলত এডুকেশনাল লোন কী? কীভাবে কম সুদে লোন পাবে? পার্সোনাল লোনের সাথে এর তফাৎ কী? ইত্যাদি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত জানতে পারবে এই প্রতিবেদন থেকেই।
Education Loan কী?
এডুকেশন বা শিক্ষার ক্ষেত্রে দেওয়া লোন বা ঋণকেই এডুকেশনের লোন বলে। অন্যান্য যেকোনো লোনের থেকে শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় এই লোন অনেকাংশে আলাদা। উচ্চশিক্ষার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের যে টিউশনের খরচ, কোচিং, বই কেনার খরচ কিংবা ল্যাপটপ বা প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার খরচই এডুকেশনাল লোনের মাধ্যমে নেওয়া যেতে পারে। পড়াশোনার এই সমস্ত যাবতীয় খরচ মেটানোর জন্য ব্যাংক বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই এই এডুকেশনাল লোন দেওয়া হয়ে থাকে।
কীভাবে Education Loan পাবে?
ছাত্র ছাত্ররা নিজেদের উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন পূরণের উদ্দেশ্যে যে কোন ব্যাংক বা ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান থেকে এডুকেশনাল লোনের (Education Loan) জন্য আবেদন জানাতে পারো। এক্ষেত্রে অবশ্যই অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়েই এই লোনের জন্য আবেদন জানাতে হবে। তবে যে কোন লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে সব সময় একাধিক প্রতিষ্ঠানে ঘুরে তাদের লোনের টার্মস এন্ড কন্ডিশন গুলি ভালোভাবে বুঝে নিয়ে সবথেকে ভালো সুবিধা প্রদানকারী লোনের জন্য আবেদন জানাতে হয়। ছাত্রছাত্রীদের যদি কোন ব্যাংকের নিজেদের অ্যাকাউন্ট থাকে, তাহলে সেই ব্যাংকের লোন বিভাগের স্টাফদের সঙ্গে আগে থেকে এই বিষয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। এর ফলে সহজে লোন পাওয়ার বিষয়গুলিও বিস্তারিত জেনে নিতে পারবে।
এডুকেশনাল লোন ও পার্সোনাল লোনের তফাৎ
পার্সোনাল লোন এর থেকে এডুকেশনের লোন অনেকাংশেই আলাদা। অনেক সময়ই দেখা যায়, অভিভাবকরা এডুকেশনাল লোনের পরিবর্তে পার্সোনাল লোন নিয়ে তার ছেলেমেয়েদের উচ্চশিক্ষার জন্য কলেজে ভর্তি করছেন। তবে এই ক্ষেত্রে শিক্ষার জন্য এডুকেশনাল লোন বেশি কার্যকরী নাকি পার্সোনাল লোন, সেটি সবার আগে ভালোভাবে বুঝে নিতে হবে। নিচে দেওয়া টেবিল থেকে এই বিষয়ে বিস্তারিত বুঝে নিতে পারবেন-
Subject | Education Loan | Personal Loan |
মোট লোনের পরিমাণ | ৫০০০০ টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত | ৫০০০০ টাকা পর্যন্ত |
সুদের পরিমাণ | বার্ষিক ৮.৫০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত | বার্ষিক ১০ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত |
অতিরিক্ত চার্জ | শিক্ষা ক্ষেত্রে লোন এর বিষয়ে কোনো অতিরিক্ত চার্জ লাগেনা | পার্সোনাল লোন এর ক্ষেত্রে প্রি পেমেন্ট চার্জ, লেট পেমেন্ট চার্জ, প্রসেসিং চার্জের মতো একাধিক অতিরিক্ত টাকা দিতে লাগে |
করের পরিমাণ | শিক্ষা ক্ষেত্রে লোন নিলে কোনরকম কর দিতে হয় না | পার্সোনাল লোনে বিশেষ প্রকারের সরকারি কর দিতে হয় |
লোন নেওয়ার সরকারি বিকল্প উপায়
Education Loan এর ক্ষেত্রে সরকারের তরফে একাধিক লোন এর উপায় রয়েছে। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেদের উচ্চ শিক্ষার জন্য এই লোনে আবেদন জানাতে পারেন। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখ্য- পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড, কেন্দ্রীয় সরকারের বিদ্যালক্ষ্মী প্রকল্প এবং সেন্ট্রাল সেক্টর ইন্টারেস্ট সাবসিডি স্কিম (CSIS) ও ক্রেডিট গ্যারান্টি ফান্ড স্কিম ফর এডুকেশনাল লোন (CGESEL)। সরকারের এই সমস্ত লোন স্কিমের দ্বারা অত্যন্ত কম সুদে অধিক সময় ধরে ঋণ শোধ করার সুযোগ থাকে ছাত্রছাত্রীদের কাছে। তাই এই বিকল্প থাকলে ব্যাংকের লোনের থেকে এই অপশনগুলি বেছে নিতে পারেন ছাত্র-ছাত্রীরা।
উচ্চশিক্ষার জন্য ঋণ নেওয়া কি আবশ্যক?
অবশ্যই এটি কোনভাবেই বাধ্যতামূলক নয়। ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমানে টাকা না থাকলেও বর্তমানে একাধিক স্কলারশিপ প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থার দ্বারা ছাত্রছাত্রীদের সাহায্য করার চেষ্টা করা হচ্ছে। মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ভালো নম্বরের সাথে পাশ করলে এই সমস্ত স্কলারশিপ গুলিতে আবেদনের সুযোগ রয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে। তাই খুব দরকার না হলে পারসোনাল লোন বা এডুকেশনাল লোনে আবেদন জানানোর প্রয়োজন নেই। একান্তই প্রয়োজন হলে উপরে বলে দেওয়া সরকারি স্কিমগুলোর সুবিধা নিতে পারেন ছাত্র-ছাত্রীরা।
Read More: