রাজ্যের মহিলাদের জন্য ‘জাগো’ প্রকল্পে এককালীন ₹৫০০০ সহায়তা – Jago Scheme in WB Govt

Jago Scheme in WB Govt: রাজ্যে মহিলাদের জন্য আবার সুখবর। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের মহিলাদের জন্য আরো একটি প্রকল্পের ঘোষনা করেছেন যার নাম হল জাগো প্রকল্প। ইতিমধ্যে বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গে চলছে যার থেকে রাজ্যবাসী বেশ কিছু সুবিধা পাচ্ছেন।

প্রচলিত প্রকল্পগুলির মধ্যে অন্যতম হলো স্বাস্থ্য সাথী, লক্ষীর ভান্ডার, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী ইত্যাদি। এরপর আবারো মহিলাদের আর্থিক সুবিধার জন্য জাগো প্রকল্প নামে আরেকটি প্রকল্প ঘোষিত হয়েছে যেখানে প্রাপ্তবয়স্ক মহিলারা সরাসরি এককালীন ৫০০০ টাকা আর্থিক সহায়তা হিসাবে পাবেন।

যে সমস্ত স্কিম গুলি পশ্চিমবঙ্গের মহিলারা পাচ্ছেন তার মধ্যে অতি জনপ্রিয় একটি প্রকল্প হল লক্ষীর ভান্ডার।

লক্ষীর ভান্ডার এবং জাগো প্রকল্পের সুবিধা ও পার্থক্য

  • এই প্রকল্পে সাধারণ শ্রেণীর (General caste) মহিলারা প্রতিমাসে ১০০০ টাকা এবং তপশিলি জাতির (Tribal) মহিলারা মাসে ১২০০ টাকা আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকেন।
  • অন্যদিকে জাগো প্রকল্পের মাধ্যমে মাসে কোন টাকা পাওয়া যাবে না, এক্ষেত্রে বছরে ৫০০০ টাকা ব্যাংকের একাউন্টে সরাসরি পাবেন।
  • লক্ষীর ভান্ডার এর ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন এবং সর্বোচ্চ বয়সসীমা থাকলেও জাগো প্রকল্পের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন বয়স ১৮ বছর হতে হবে এবং পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে কিন্তু এর সর্বোচ্চ বয়সসীমা নেই।

এই প্রকল্পগুলির উদ্দেশ্য কি?

লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো মহিলারাও যাতে সংসার চালানোর ক্ষেত্রে পাশে থাকতে পারেন। তার সঙ্গে নিজের হাত খরচার জন্য যেটুকু সামান্য টাকা দরকার হয় তা নিজেরাই জোগাড় করতে পারেন। সেই বিষয়টি মাথায় রেখে রাজ্য সরকার এই প্রকল্পের ব্যবস্থা করেছিলেন।

তবে জাগো প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য গুলি হল রাজ্যের মহিলাদের আর্থিকভাবে আরও শক্তিশালী করা এবং এর পাশাপাশি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর কাজের ক্ষেত্র ও কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করা।

জাগো প্রকল্পের যোগ্যতা এবং আবেদনকারীকে কি কি মেনে চলতে হবে? জেনে নিন

এই প্রকল্পে নিজের নাম অন্তর্ভুক্তি করার ক্ষেত্রে আবেদনকারীকে কিছু বিষয় পূরণ করতে হবে সেগুলি হল-

  • আবেদনকারীকে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে।
  • এর পাশাপাশি তার সর্বনিম্ন বয়স ১৮ বছর হতে হবে তবে সর্বোচ্চ বয়সসীমা এই প্রকল্পের ক্ষেত্রে নেই।
  • আবেদনকারীর একটি ব্যাংক একাউন্ট (Bank Account) থাকতে হবে।
  • অন্তত ৬ মাসের ব্যাংকের স্টেটমেন্ট (Bank Statement) আবেদন করার সময় লাগবে।
  • আবেদনকারীকে যে কোন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য (Self help group or SHG) হতে হবে এবং তাতে ১ বছর যুক্ত থাকার রেকর্ড থাকতে হবে।
  • এই গোষ্ঠী থেকে সক্রিয়ভাবে সদস্য হিসাবে লেনদেন অথবা ঋণ নেওয়ার রেকর্ড থাকতে হবে।

আবেদন করার পদ্ধতি জেনে নিন

  • জাগো প্রকল্পে আবেদন করার ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে (shgsewb.gov.in) প্রবেশ করে নিজের রেজিস্ট্রেশন প্রথমে করাতে হবে।
  • রেজিস্ট্রেশন করানোর পর আবেদনকারীকে উক্ত পোর্টালে লগইন করে আবেদন পত্র যথাযথভাবে পূরণ করতে হবে।
  • আবেদন পত্র পূরণ করার সময় যে সমস্ত তথ্যাদি আপলোড করার কথা বলা হয়েছে সেটি যথাযথভাবে করতে হবে যেমন ব্যক্তিগত নথি, ব্যাংক সংক্রান্ত তথ্য, স্বনির্ভর গোষ্ঠী সংক্রান্ত তথ্য ইত্যাদি।
  • আবেদন অনলাইনে যথার্থভাবে পূরণ করার পর সাবমিট বাটনে ক্লিক করে প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ করতে হবে। এ
  • এরপর আবেদনের স্ট্যাটাস সময় সময় দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

এই প্রকল্পটি অন্য প্রকল্প থেকে আলাদা –

  • কারণ এখানে সর্বোচ্চ বয়সসীমা নেই অর্থাৎ ৬০ বছরের বেশি বয়স কখনো মহিলা এই সুবিধা পেতে পারেন।
  • সরাসরি আপনার একাউন্টে (Bank account) টাকা ঢুকবে তাতে টাকা কোনভাবে মার যাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই অথবা টাকা পেতে দেরি হবে না, যথাযথ সময় পেয়ে যাবেন।
  • একসঙ্গে বেশ কিছুটা অর্থ সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে তা এককালীন কোন দরকারে আপনি টাকাটি ব্যবহার করতে পারবেন।
  • স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি ও সক্রিয় থাকবে এতে রাজ্যের মহিলা তথা জনগণের স্বনির্ভর হওয়ার একাগ্রতা তৈরি হবে।
  • মহিলাদের নিজে উদ্যোগে কাজ করার জন্য উৎসাহ প্রদান করা যাবে।

এক কথায় বলা যায় যে জাগো প্রকল্প টি মহিলাদের স্বনির্ভর হওয়ার ক্ষেত্রে ওপর একটি বড় এবং ভালো সুযোগ। মহিলারাও যাতে সময় সঙ্গে সঙ্গে পুরুষদের পাশাপাশি অর্থ রোজগার করে নিজের এবং সংসারের আর্থিক চাহিদা পূরণ করতে পারে তার জন্য এটি একটি ভালো সুযোগ বলে মনে করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের পাশে থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই ভাবে মহিলাদের সাহায্য করে অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করছে। এটি সত্যি একটি ভালো উদ্যোগ।

Leave a Comment