Lokkhir Bhandar June Maser Taka Kobe Debe – জুন মাসের লক্ষীর ভান্ডারে টাকা কবে দেবে? দিচ্ছে ৩০০০ ও ৩৬০০ টাকা?
লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পে টাকা না পাওয়ায় বহু উপভোক্তার মনে হতাশা ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। সরকারি দেরি ও জটিলতার কারণে মানুষ অসহায় ও ক্ষুব্ধ অনুভব করছেন।

জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের (Lokkhir Bhandar) টাকা আসছে না কেন? দ্বিতীয় ধাপের জেলাভিত্তিক লিস্টে কোন কোন জেলার নাম থাকছে সবার উপরে। যারা যারা নতুন করে আবেদন করেছেন, তাদের দ্বিতীয় SMS কবে আসবে?
যারা এখনো পর্যন্ত গত কয়েক মাসের টাকা পাননি অথবা, তাদের টাকা বকেয়া রয়েছে। তাদের নিয়ে কি জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী? এই সমস্ত প্রশ্নই হয়তো রয়েছে আপনাদের মনে। তবে আজকের সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যে আপনাদের এ সমস্ত প্রশ্নের উত্তর জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
একই সঙ্গে লিস্ট ধরে এক এক করে রাজ্যের সমস্ত জেলার উপভোক্তাদের কি কি সমস্যার জন্য তাদের টাকা আসছে না । সেটি ঠিক করতে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে রাজ্যের নারী এবং শিশু কল্যাণ দপ্তর (Women and Child Welfare Department) সেটাও কিন্তু স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে নবান্নের (Nabanna) তরফে।
উপভোক্তাদের টাকা না আসার কারণ কী?
তবে মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বিশেষ কিছু শর্তাবলীর উল্লেখ করা হয়েছে। যার নিরিখে এবারে রাজ্যের প্রায় ৬ লক্ষেরও বেশি মহিলাকে টাকা দেওয়া বন্ধ করছে রাজ্য সরকার। কোন কোন ডকুমেন্ট জমা না করলে এবারে জুন মাসের টাকা আর একাউন্টে আসবে না? কিভাবে হবে এই সমস্যার সমাধান? সবটাই জানাবো আজকের এই প্রতিবেদনে।
আজ ১৫ই জুন ২০২৫ তারিখে মুখ্যমন্ত্রীর সাংবাদিক সম্মেলনের পরে, লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা সম্পর্কে কি জানিয়েছে নবান্ন? জুন মাসে লক্ষীর ভান্ডারের টাকা দিতে দেরি হচ্ছে কেন? ৬ লক্ষ মা বোনেদের টাকা দেওয়া বন্ধ। ফের কত তারিখে টাকা দেওয়া শুরু হবে কি জানালেন মুখ্যমন্ত্রী?
জুন মাসে লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা নিয়ে বিভ্রান্তি
জুন মাসে লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা নিয়ে, বিভ্রান্তি দেখা দিচ্ছে রাজ্যের বেশিরভাগ মহিলাদের মধ্যে। সাধারণত, মাসের ১ থেকে ৪ তারিখ বা খুব বেশি হলেও প্রত্যেক মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে, সকলের ব্যাঙ্ক একাউন্টে ঢুকতে শুরু করে এই লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা।
তবে বর্তমানে জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ শেষ হতে চলেছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত অনেকের একাউন্টে আসেনি এই মাসের টাকা। অন্যদিকে আবার অনেক মহিলাদের এবার এই লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা দেওয়া চিরকালের জন্য বন্ধ হতে চলেছে।
প্রকল্পের গুরুত্ব ও সমস্যা
বর্তমান সময়ে বাংলার গৃহবধুদের জন্য এই লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা হচ্ছে একটি অন্যতম আয়ের উৎস (Source of Income)। অনেক গরীব এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের মহিলারা এই টাকা দিয়ে, তাদের সংসারের বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় কাজকর্ম করে থাকেন। সচ্ছল পরিবারে এর গুরুত্ব ততটা না থাকলেও, একটি সাধারণ পরিবারে কিন্তু এই ১০০০ টাকা অথবা ১২০০ টাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তবে দেখা যাচ্ছে অনেক মহিলার লক্ষীর ভান্ডার একাউন্টের টাকা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। কারণ অনেকেই এবারে লাইফ স্ট্যাটাস সার্টিফিকেট (Life Status Certificate) জমা করেননি। আবার অনেকে জাল কাগজ (Duplicate Document) জমা দিয়েছে। আবার অনেকের ব্যাঙ্কের ডিটেলস ভুল রয়েছে।
তথ্য বিভ্রাট ও উপভোক্তার ভুল
এছাড়াও মুর্শিদাবাদ, বীরভূম এবং কলকাতার মত জেলাতে একজন উপভোক্তার টাকা অন্যজনের একাউন্টে চলে যাওয়ার অভিযোগ আসছে। আপনাদের জানিয়ে রাখি যে, আপনাদের লাইফ স্ট্যাটাস সার্টিফিকেট (Life Status Certificate) জমা করা অত্যন্ত আবশ্যক। কারণ এই সার্টিফিকেটের মাধ্যমেই বুঝতে পারা যাবে যে আপনি জীবিত রয়েছেন না মারা গেছেন। কারণ মারা যাওয়া ব্যক্তির কিন্তু লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা দেওয়া হয় না।
তথ্য জমা ও ব্যাঙ্ক একাউন্ট সংক্রান্ত নির্দেশনা
আপনাদের মধ্যে যারা যারা এখনো পর্যন্ত লাইফ স্ট্যাটাস সার্টিফিকেট জমা করেননি, তারা অবশ্যই BDO অফিস থেকে এই সার্টিফিকেটটি নিয়ে জমা করবেন। পাশাপাশি, অনেকেই কিন্তু ব্যাঙ্কের ডিটেলস ভুল দিচ্ছেন। অর্থাৎ, কোনভাবেই তার ব্যাঙ্কের একাউন্টের নাম্বার ভুল দিচ্ছেন অথবা জয়েন্ট একাউন্ট জমা করে দিচ্ছেন।
জানিয়ে রাখি যে জয়েন্ট একাউন্টে কোনভাবেই লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা দেওয়া হবে না। এটা মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। তাই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশমতো এবারে প্রত্যেক মাসে প্রথমে উপভোক্তাদের লক্ষীর ভান্ডার একাউন্টের ডকুমেন্ট যাচাই করে তবেই কিন্তু টাকাটি তাদের ব্যাঙ্কের একাউন্টে দেওয়া হবে। এমনটাই জানিয়েছেন নবান্নের শীর্ষকর্তারা।
কোন কোন জেলায় টাকা এসেছে বা আসেনি?
এই মুহূর্তে টাকা কেন সব জেলাতে দেওয়া হচ্ছে না। সেই বিষয়ে রাজ্যের গ্রাম উন্নয়ন দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে- যে প্রথম ধাপে ৯টি জেলায় টাকা দেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে গত ১০ই জুন তারিখে। বাকি যে সমস্ত জেলা রয়েছে তাদের টাকা বন্টন শুরু হয়েছে। ১১ই জুন থেকে বাকি জেলাগুলিতে টাকার বন্টন শুরু হয়েছে।
অনেকেই এখনো পাননি জুনের টাকা
উত্তর দিনাজপুর, বাঁকুড়া, কালিম্পং, নদীয়া, মালদা, দার্জিলিং এই কয়েকটি জেলাতে কিন্তু প্রায় ৪ লক্ষেরও বেশি উপভোক্তা এখনো পর্যন্ত জুন মাসের টাকা পাননি। এরই সঙ্গে আরো একটি খবর সকলের চিন্তাকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। যে এখন প্রত্যেক মাসে প্রচুর লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের একাউন্ট কিন্তু বন্ধ করে দেওয়া হবে। সাথে সেই সমস্ত একাউন্টে টাকা দেওয়া বন্ধ হবে।
তাই এই মাসেও কিন্তু অনেক একাউন্টে আর টাকা দেওয়া হচ্ছে না। আবার অনেক সুবিধাভোগীর লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পে নতুন করে নাম উঠছে। অর্থাৎ, প্রচুর মহিলা কিন্তু আবেদন করছেন। তাদেরও কিন্তু নাম লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পে উঠছে। আবার অনেক মহিলা কিন্তু ছাটাই হয়ে যাচ্ছেন।
নতুন আবেদনকারীদের জন্য দেরি
যারা নতুন করে আবেদন করেছেন ,এই মাস থেকে তারা সকলেই টাকা পেয়ে যাবেন। তবে তাদের টাকা পেতে একটু দেরি হতে পারে। অর্থাৎ, যে সমস্ত মা-বোনেরা নতুন করে লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পে আবেদন করেছেন। তাদের জন্য খুবই বড় একটি খুশির খবর। তাদের প্রত্যেকের টাকা আসতে চলেছে এবারের জুন মাসে। এক্ষেত্রে, টাকা পেতে একটু দেরি হতে পারে।
আর এই সমস্ত কারণে এবার এই লক্ষীর ভান্ডারের টাকা নির্দিষ্ট সময় দেওয়া সম্ভব হয়নি। আগামী ২০ তারিখের মধ্যে এই টাকাটি প্রত্যেকটি মহিলার একাউন্টে দিয়ে দেওয়া হবে বলে জানা যাচ্ছে। ১১ই জুন থেকে এই টাকাটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আগামীকাল থেকেই এক সপ্তাহের মধ্যে সকলের টাকা তাদের একাউন্টে চলে আসবে।
২০ তারিখের মধ্যে টাকার প্রতিশ্রুতি
যারা যারা নতুন করে আবেদন করেছেন এবং বেনিফিশিয়ারি আইডি (Beneficiary ID) তৈরি হয়েছে। অর্থাৎ, যারা যারা SMS পেয়ে গেছেন, তাদের বেনিফিশিয়ারি আইডি SMS-এ দেওয়া হবে। এই ID যারা পেয়ে গেছেন, তারা আগামী ২০ই জুনের মধ্যে লক্ষীর ভান্ডারের টাকা পেয়ে যাবেন।
Read More: