বাড়তি রোজগারের পথ খুঁজছেন? স্মার্টফোনেই শুরু করুন বিনা পুঁজির রিসেলিং ব্যবসা! – Zero to Hero No Investment Businesses

Zero to Hero No Investment Businesses: বর্তমান সময়ে কর্মসংস্থান খুঁজে পাওয়াটা একটা খুব বড় চ্যালেঞ্জ। চাকরির ক্ষেত্রে নিরাপত্তা অভাব এবং বেশিরভাগ মানুষের আয়ের পরিমাণ খুবই সীমিত বা পছন্দ মত আয়ের পথ খুঁজে পাননি তাই আয়ের পরিমাণটাও কম। তাই অনেকেই ব্যবসাকেই বেছে নিচ্ছেন আয়ের পথ হিসেবে।

আবার অনেকে চাকরির পাশাপাশি ছোটখাটো অনলাইনে বা অফলাইনে ব্যবসা শুরু করার কথা ভাবছেন বা অনেকে করেও ফেলেছেন। ব্যবসা ছোট বড় যাই হোক না কেন ভালোভাবে চালাতে পারলে সেখান থেকে আয় নিশ্চিত। তবে সেটি সঠিক নিয়মে চালাতে হবে।

এই প্রতিবেদনে এমনই একটি ব্যবসার কথা আইডিয়া হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে যার থেকে প্রত্যেক মাসে ৫০-৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন কিন্তু তার জন্য কোন প্রথমে পুঁজি লাগবে না। জেনে নিন বিস্তারিত এই আলোচনা থেকে।

এখন প্রশ্ন হল কি বিজনেস আইডি এখন আলোচনা করা হয়েছে, হ্যাঁ সেটাই বলছি, এখানে অনলাইনে রিসেলিং এর একটি বিজনেস আইডিয়া দেওয়া হয়েছে শুধুমাত্র আপনার জন্য। কিন্তু এটি কিভাবে করবেন বা কত আয় হওয়া সম্ভব কিভাবেই বা সেখান থেকে সফলতা পাবেন এগুলি সবচেয়ে বড় প্রশ্নের জায়গা।

এই ব্যবসাটি শুরু করার আগে যে বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে সেগুলি কি কি?

যে কোন ব্যবসা শুরু করার আগে কয়েকটি বিষয় মনে রাখা খুব জরুরী। সেগুলি হল,

  • প্রথমে আপনাকে বাজারে কোন দ্রব্যের চাহিদা বেশি আছে সেটিকে বুঝে নিতে হবে সেই অনুযায়ী আপনাকে প্রোডাক্ট তৈরি বা সংগ্রহ করে সেটিকে বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে তবেই বাজারে চাহিদা অনুযায়ী আপনার ব্যবসাটি ভালোভাবে চলবে। তাই বাজারে কোন দ্রব্যের চাহিদা কাদের বা কোন মাত্রায় আছে সেটি আগে জানা দরকার।
  • এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য প্রথমে যে টিকেট টার্গেট করতে হবে সেটি হল গ্রাহক। গ্রাহকদের যে বিষয়ে আগ্রহ বেশি সেটি কি আপনাকে খুঁজে বার করতে হবে।
  • আপনার প্রোডাক্টের প্রতি গ্রাহকদের পরিচিতি এবং বিশ্বাস বাড়ানোর জন্য একটি স্ট্যাটেজি আপনাকে খুঁজে বার করতে হবে এবং সেটি হল অ্যাড। ‌ এই পরিচিতি বা ব্র্যান্ডিং বিষয়টি চালানোর জন্য একটু সময় আপনাকে ধৈর্য ধরে কাজ করতে হবে।

রিসেলিং ব্যবসাটি আসলে কি?

রিসেলিং শব্দের অর্থ হলো পুনরায় বিক্রি অর্থাৎ একটি এমন একটি ব্যবসা যেটি আপনার নিজস্ব কোন প্রোডাক্ট নয় আপনি অন্য কারোর থেকে কিনে সেটির মধ্যে কিছু পরিবর্তন করে বা না করেও সেটিকে মার্কেটে অনলাইনে বিক্রি করা। এক্ষেত্রে নিজের নাম বা ব্র্যান্ড আপনাকে তৈরি করতে হবে। আপনি এখানে একজন মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাজ করবেন। প্রত্যেকটি দ্রব্যের যা ক্রয় মূল্য তার সঙ্গে আপনার আনুষঙ্গিক খরচ একটি গড় হিসাবে হিসাব করে তার সঙ্গে যুক্ত করে একটি বিক্রয় মূল্য আপনাকে স্থির করতে হবে এবং সেই মূল্যেই আপনাকে দ্রব্যটি অনলাইনে বিক্রি করতে হবে।

কিভাবে আপনি ব্যবসা করবেন?

  • অনলাইনে ব্যবসা করার জন্য হয় আপনাকে বিভিন্ন অ্যাপের সাহায্য নিতে হবে অথবা নিজের একটি ওয়েবসাইট বা ল্যান্ডিং পেজ তৈরি করতে হবে।
  • এখানে কিছু অ্যাপের কথা বলা হল উদাহরণ হিসেবে যারা রিজনিং এর ব্যবসা করে যথেষ্ট পরিমাণে মুনাফা অর্জন করছে। যেমন – Meesho।
  • এদের কাজের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো যে কোন দ্রব্য গ্রাহকের অর্ডার অনুযায়ী উৎপাদনকারীর কাছ থেকে নিয়ে সেটিকে ভালোভাবে প্যাকেটজাত করে গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেওয়া এবং মুনাফার অংশকে নিজের কাছে রেখে উৎপাদকের প্রাপ্য তাকে বুঝে দেওয়া।

রিসেলিং ব্যবসায় কাজ করার পদ্ধতি সম্বন্ধে আপনি কি জানেন?

  • আপনি যদি রিসেলিং এর কাজ করতে চান, তাহলে কিভাবে এখানে কাজ করতে হয় তার পদ্ধতিগুলি আপনার জানা জরুরী। পদ্ধতিগুলি হল- প্রথমে আপনাকে অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে এবং সেটি নিজের নামে রেজিস্ট্রেশন করাতে হবে।
  • পছন্দের প্রোডাক্ট বেছে নিয়ে অবশ্যই সেটি যেন ট্রেনডিং প্রোডাক্ট হয় তার ছবি ও বিবরণ যথাযথভাবে স্থির করে সোশ্যাল মিডিয়াতে, যেমন- ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি, সেটিকে শেয়ার করতে হবে।
  • এরপর গ্রাহক তার পছন্দমত দ্রব্যটি অর্ডার করলে কাস্টমারের ঠিকানায় প্রোডাক্টটি পাঠিয়ে দিতে হবে এবং তার পেমেন্ট অনলাইনে বা অফলাইনে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

রিসেলিং ব্যবসার সবচেয়ে বড় সুবিধা গুলি জেনে নিন

  • এই ব্যবসার সবচেয়ে বড় সুবিধা হল আপনাকে যে কোন ব্যবসার ক্ষেত্রে পুঁজি আগে থেকে বিনিয়োগ করতে হয় কিন্তু এ ক্ষেত্রে আপনাকে সেটা করতে হবে না।
  • দ্রব্যাদি কেনার বা সেগুলিকে স্টকের রাখবার জন্য আপনার কোন গুদামঘর বা অন্য কোন ঝামেলা পোহাতে হবে না।
  • গ্রাহক কোন দ্রব্যের অর্ডার আপনার অনলাইন স্টোর থেকে দেখে পছন্দ করলে সরাসরি অর্ডারটি চলে যাবে কোম্পানির কাছে, কোম্পানিরই দায়িত্ব থাকবে সেগুলিকে যথাযথভাবে প্যাকেটজাত করে গ্রাহকের হাতে পৌঁছে দেওয়া।
  • যদি গ্রাহক অনলাইনে ডেলিভারি চার্জ সহ দ্রব্যটির দাম কোম্পানিকে অনলাইনে পেমেন্ট করে তাহলে আপনি টাকা-পয়সা নিয়েও চিন্তামুক্ত থাকবেন মাঝখান থেকে আপনার লাভের টাকাটি আপনার ব্যাংক একাউন্টে ঢুকে যাবে। অর্থাৎ আপনি ঘুমের মধ্যে থাকলেও আপনার অ্যাকাউন্টে টাকা চলে যাবে।
  • কোন দুশ্চিন্তার ব্যাপারই নেই। যেকোনো দোকানে প্রোডাক্ট কিনে ব্যবসা করলে দ্রব্যটি বিক্রি না হলে সেটি একটি বড় চিন্তার বিষয় হয়ে যায় দোকানদারের কাছে, কিন্তু যেহেতু আপনার অনলাইন স্টোর তাই শুধু ছবিটি আপনার স্টোরি থেকে যাবে প্রোডাক্টের বিক্রি হওয়া বা না হওয়ার জন্য আপনাকে কোন রকম দুশ্চিন্তা করতেই হবে না।
  • এই কাজের জন্য শুধু আপনার একটি স্মার্টফোন এবং উপযুক্ত ইন্টারনেটের সুবিধা থাকলেই চলবে।
  • এই কাজটি আপনি অন্য কোন কাজের পাশাপাশি বাড়ি থেকে বসেই করতে পারবেন আপনার অবসর সময়ে।

এই ব্যবসায় আপনার কি পরিমান আয় হতে পারে?

ব্যবসার শুরুতেই একটি প্রশ্ন মাথায় আসে যে এই ব্যবসা করে কতটা আপনার আয় হতে পারে।

  • প্রতিদিন যদি আপনি ১০টি প্রোডাক্ট বিক্রি করেন এবং প্রতিটি প্রোডাক্ট পিছু আপনার লাভ যদি ১৫০ টাকা হয়, তাহলে আপনার একদিনে ১৫০০ টাকা বাড়িতে বসেই রোজগার হয়ে যাবে প্রতিদিন মাত্র কয়েক ঘন্টা অনলাইনে কাজের বিনিময়ে।
  • এইভাবে যদি আপনি মাসে ২০ দিনও কাজ করেন তাহলে আপনার মাসিক আয় সর্বনিম্ন ৩০ হাজার হতে বাধ্য।

এবার সর্বোচ্চ হিসাব করে নিন, যা আরো অনেক বিষয়ের উপর নির্ভর করছে।

ধৈর্য ধরে শুধুমাত্র কাজ করলেই আপনার সফলতা নিশ্চিত।

সফল হওয়ার চাবিকাঠি বা কৌশল জেনে নিন

যেকোনো ব্যবসায় যেরকম বিশেষ কিছু কৌশল লাগে এক্ষেত্রেও আপনাকে কিছু পদ্ধতি বা কৌশল অনুসরণ করতে হবে-

  • আপনাকে সেই সমস্ত দ্রব্যের ওপর ব্যবসা করতে হবে যেগুলি বর্তমানে মানুষের চাহিদার মধ্যে আছে এবং সেটি যথেষ্ট জনপ্রিয়। যেমন- বেবি প্রোডাক্ট, মহিলাদের বিভিন্ন ছোটখাটো গহনা, জামা কাপড় ইত্যাদি।
  • আপনাকে অনলাইন স্টোরে যে ছবি আপলোড করতে হবে তার গুণগতমান যেন ভাল হয়। তার সঙ্গে আপনাকে কিছু ভিডিও শেয়ার করতে হবে।
  • রিলস্ ফরমেটে সেগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়মিত ছাড়তে হবে।
  • সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনাকে আপডেট থাকতে হবে এমনকি পেইড অ্যাড পর্যন্ত আপনাকে চালাতে হতে পারে।
  • বিভিন্ন গ্রুপ আপনাকে বানাতে হবে যেমন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ, টেলিগ্রাম গ্রুপ, ফেসবুকের গ্রুপ, ফেসবুক পেজ ইত্যাদি। ‌
  • এছাড়াও আপনি চাইলে আপনার অতি পরিচিত কিছু ব্যক্তি ও বন্ধুদেরও রেফার করতে পারেন।

এই ব্যবসাটি আসলে কাদের জন্য?

এটি এমনই একটি ব্যবসা যেখানে পুরুষ মহিলা বা বেকার যুবক যুবতী অথবা কর্মজীবী কোন ব্যক্তি বা বয়স্ক কোনো ব্যক্তির ক্ষেত্রে কোন বাধা নিষেধ নেই। নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে ব্যবসাটি করতে পারলে যে কেউ, যে কোন জায়গা থেকে এটি করতে পারেন।

  • যদি বাড়িতে থাকা গৃহবধূ চান তাহলেও যেমন ব্যবসা করতে পারেন।
  • তার সঙ্গে আপনি যদি কলেজ পড়ুয়া হন তাহলে নিজের খরচ চালানোর জন্য এই ধরনের ব্যবসা আপনি করতে পারেন।
  • চাকরিজীবীরাও বাড়তি রোজগারের জন্য এই ধরনের ব্যবসা অনায়াসেই করতে পারেন আপনার অবসর সময়ে।
  • এমন কি অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাও ব্যবসা করতে পারেন।

পরিশেষে বলা যায়,

  • বর্তমান সময়ে অনলাইনের যেভাবে চাহিদা বেড়েছে এবং জনপ্রিয় হয়ে গেছে তাই এই ধরনের ব্যবসা করাটা এমন কিছু ঝুঁকি বা কঠিন কাজ নয়।
  • সবার হাতেই এখন স্মার্ট ফোন আছে। বর্তমানে কাজের চাহিদা অনুযায়ী কাজের যোগান কম। তার চেয়েও বড় কথা বর্তমান উচ্চ বাজার দরের সময়ে সবাই একটু ভালোভাবে থাকার জন্য এবং স্বাচ্ছন্দ্য ভোগ করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে এবং সেটি একমাত্র আসতে পারে টাকার বিনিময়ে।
  • তাই টাকা রোজগার করাটাই এখন মানুষের অন্যতম উদ্দেশ্য হয়ে গেছে। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে সবাই পরিচিত।
  • বাজারে যাওয়ার চেয়ে মানুষ সোশ্যাল মিডিয়ায় জামাকাপড় থেকে শুরু করে খাবারদাবার পর্যন্ত অর্ডার করে বাড়িতে বসেই হাতের নাগালে সবকিছু পেতে চাইছে এবং অভ্যস্ত হয়ে গেছে। তাই এই উচ্চ প্রযুক্তির যুগে বাইরে না বেরিয়ে একটা অতিরিক্ত আয়ের পথ হিসাবে এই ব্যবসাটি যথেষ্ট ভালো এবং সম্মানের।

তাই আপনি চাইলে আপনিও অতি সহজেই এই কাজে যোগ দিতে পারেন।

Leave a Comment